শাহনাজ নাসরীন

আহা জ্বর গভীর জ্বর, কাঁপতে কাঁপতে ঘোরের মধ্যে চলে গেলে আর চিন্তা নাই। ঘ্যাসঘেসে মাথা ব্যথা নাই, মোচড় দেয়া মাংস ব্যথা নাই, গিট্টু লাগা আঙুল নাই, হাড়ের কটকটানি মরমরানি নাই, কাউরে চিনার ঠ্যাকা নাই। ঘোর ঘোর, কি গভীর মধুর ঘোর! নিশ্বাসের তালে তালে কোঁকানির কোঁ কোঁ, ঘুম পাড়িয়ে দেয় গানের মতো!

রমনা যাইতে দিবা না, টিএসসি যাইতে দিবা না, বইমেলায় যাইতে দিবা না এখন কি ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াও হইতে দিবা না নাকি? সরকারের তো খুব লাভ হইতেছে। এত মেডিক্যাল বানাইছে, এত ডাক্তার, রুগী লাগবে না? আর ওষুধ কোম্পানিগুলা মোটা টাকার চান্দা দিবে বুঝলেন মহাজনেরা? অত মহামারিটারি বলবেন না, কোথাকার জল কোথায় গড়ায়… দায়দায়িত্বে মারো লাথি। রক্তচক্ষুগুলা মনে পড়লে হাসি পাইতেছে। আহা শান্তি কি শান্তি!

আবার কে জ্বালায়, পানির ঝাপটায়! কোত্থেকে বাতাস ঢোকে ফুরফুর করে। শিরশিরে ঠান্ডা বাতাস শরীরে সাপের মতো কিলবিল করে। বিবমিষা জাগায়। বমন বমন! ঘোর কেটে যায়।

মমতাময় হাতে কে তুলে নেয় বৃশ্চিক ব্যথা! জানি এ ছয় খণ্ডে ভাগ হওয়া মায়ের  স্নেহ হাত নয়। হ্যাঁ হ্যাঁ আমার খুব ভালোবাসার খাই। একটু টান পড়লেই টের পাই। তবে কি এল? ওহে মরণ শ্যাম সমান! ফুলের কলির মতো যে জমিয়ে রাখে সবটুকু আদর! ও আমার ঘোরের সাথী ডুবিয়ে দাও ডুবিয়ে দাও বেঘোর অতলে।