মৌসুমী মণ্ডল দেবনাথ
পৃথিবী যেদিন শিশুরোদ প্রসব করেছিল, সেদিন জোছনার ঝাঁকে তুমিও জন্ম নিলে। একটু বড় হলে, আমি হলাম তোমার খেলার সাথী। বয়সে আমি তোমার চেয়ে বারো মাসের বড়। তবুও কেন জানি না তুমি আমাকেই ছোট্ট করে ডায়েরিতে লিখলে ‘নীরা’। সেদিন থেকেই আমি ‘নীরা’ আর তুমি আমার ‘সুনীল’।
একদিন তুমি বললে, নারী শুধু ইতিহাস নয়, নারী মানে সাহিত্যও। আমার হাসি পেলো। তোমরা পুরুষেরা আসলে কী, সমুদ্র? দর্শন শেষে নিজের আগুনে ঝাঁপ দাও, ঘোড়ায় চেপে উপত্যকা পেরিয়ে যাও আলো আঁধারের জিয়নকাঠি নিয়ে। অবশেষে ঠিক করো কোন হ্রদের জলে বানাবে নীরমহল। তর্ক শেষে আমি বললাম, নারী মানে উতল বাতাস, উদাস গাঙের ঢেউ। নারী হলো নীল আকাশে সাদা মেঘের পাল। নারীই হলো অন্নদা, নারী শুধুই সাহিত্য নয়, বিজ্ঞানও বটে।
পুরুষ শুধুই কর্তৃত্ব নয়, সাহিত্যও হয়। আর দুইয়ে মিলে শৃঙ্গারের রসায়ন বিদ্যা…
দুটো সবুজ চন্দনা বাসা বেঁধেছে তোমার শান্ত চোখে। একটি পাখির বর্ণালী হরণ করেছে অরণ্য | আর অন্যজনের মধুর ভাষা তুমি। তোমার অনামিকার পাথরে ঝিলিক দিয়ে উঠে সেই পাখির অপার্থিব নীরার কাব্যকথা। এই শহরেই সরব হয় কৃত্তিবাসের কথা আর এই শহরেই ‘নীরা ‘। আমাকে নিয়ে লেখা কবিতার কালো অক্ষরগুলো আমি সাজিয়ে রেখেছি, আমার পুরুষমেঘের দ্বিমাত্রিক দিবারাত্রিতে। তোমার সাথেই চলে আমার নিত্য জলখেলা, অবিরত আমিই তোমার সাঁতার শেখা নদী।